যাচ্ছি না কি পা বাড়িয়ে, সঙ্গে সঙ্গে তাই বলে?

যাচ্ছি না কি পা বাড়িয়ে

সঙ্গে সঙ্গে তাই বলে?

 

যাবার সময় হাতছানি দেয় মন গহনের অতলে

যাচ্ছি না কি পা বাড়িয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাই বলে?

 

এই যে আজও রোদ রয়েছে নীল আকাশের কবলে

ই যে দেখি তন্বী মেয়ে প্রেমিক নিয়ে বগলে

 

এই তো আজও দম রয়েছে মধ্য রাতের আঁচলে

শরীর ভাঁজে পরস্পরে রক্ত নাচন ঢেউ তোলে

 

জ্যোৎস্না ভরা শাদা পাতায় দিনের সূর্য যায় গলে

ব্যর্থ প্রেমের ব্যাথার দানে কাব্য লেখে পাগলে

 

আজও দেখি ঘরের কোণে অর্ধাহারে দিন চলে

ভাঁড়ার ঘরের চাবির  গোছার ভাগ পায়নি সকলে

 

মঞ্চে উঠে ঐ যে নেতা মিথ্যা বলে যায় চলে

দোষী কেমন পার পেয়ে যায় সূক্ষ্ম আইন ফাঁক গলে

 

এসব ছেড়ে কেনই যাব আজও প্রেমে মন গলে

যুদ্ধ আজও জারি আছে দোষীর বিনাশ না হলে।।

 

(১৯/১১/১১)

যে যায়...... সে যায়......

যে যায়...... সে যায়......

 

......   ......   ......

    .......   ......   ......

        ......    ......   .....

          ........   ........    ......

 

 

তবুও তোমার সময় হলো

নোঙর তুলে নেবার?

নদীর জলে সাঁতার কেটে

সাগরে ডুব দেবার

 

পাথর ভেঙ্গে পাহাড়ে উঠে

খাদের ধারে ধুপ.

বুকের ভিতর প্রতিধ্বনি

তবুও থাকি চুপ

 

শূন্য থেকে শুরু করে

শূন্য চরাচর

কোলাহল তো বারণ হলো

নিথর বরাবর

 

ভালোবাসার মেঘ রোদ্দুর

বৃষ্টিতে টাপটুপ

আজ সাহারা কালকে গোবী

গড়ছে বালির স্তূপ

 

নিথর শরীর পাথর রাতে

অশ্রুস্বরে একা

শূন্য থেকে শূন্য হয়ে

দীর্ঘ যবনিকা ..................

 

(১১/০৩/১২)

রং নাম্বার

রং নাম্বার

 

ঐখানে গোপন ডুবুরি তোমার জলে তৃষ্ণা মেটায়

নিভৃতে নিরবে একা

যে পথিক পথ হারিয়ে তোমার নাভির স্মৃতিতে আজো দাঁড় টানে....

যে ছেলেটা তোমার ভিজে কাপড়ে স্বপ্নদোষে ভোগে

অমাবস্যা পূর্ণিমা তিথিতে

তোমার হৃদয়ের গোপন বিজন রাতে মোবাইল বাজিয়ে

রেখেছে দেখো

তোমার শরীর ছাড়িয়ে দুরন্ত দুপুরগুলো

আজও স্বরবর্ণ ব্যাঞ্জণবর্ণ তাদের অক্ষরে

চুম্বনের অন্ধগলিতে গাঢ় আদর যত প্রাজ্ঞ হয়েছে রোজ

তত হয়ত শীতল তোমার তাপ

তবু শরীর ছেড়ে গেলে সে বড়ো, কঠিন নিরালা রাত

বহুদূর হেমন্তের শিশির এসে নিয়ে গেলে তোমার নাভিকুণ্ডের ওম

একবার পিছন ফিরে দেখো মোবাইলের রিংটোনে

হয়তো তোমার ছবির সাথে বিবস্ত্র স্বপ্ন সব

পরিত্যাক্ত সিমকার্ডে তখন

 

 

রক্তের উজানে

রক্তের উজানে

 

ভালোবাসার পদ্মপাতায় গোলাপকুঁড়ি ইচ্ছেটুকু

রঙিন হল বলে

তোমার রূপে পরীর খেলা মাদল তালে দেলে

 

আলোছায়ার মনের ভিতে উষ্ণ যত ঢেউ

নরম শরীর শীতল প্রাণে স্বপ্ন সাগর উজান টানে

রাত বিরেতে কেউ।

 

এই যে এমন ব্যাকুল করা

মন উজানে শরীর ভেজা সঙ্গ সুধা রস।

ছায়া পথের সময় ধরে মহাকালের বশ।

 

এইতো সখী সত্য তোমার নয়ন জোড়া আলো।

এই দুনিয়ার ব্যস্ত সময়

লাভের কড়ির সুখের চেয়েও অনেক বেশি ভালো।

 

রামধনু রঙ এই যে শরীর রক্ত গরম আগুন।

এই তো সখী সত্য কেবল।

 জগত জুড়ে খেলছে দেখো হৃদয় জুড়ে ফাগুন।

 

ঘর তুলেছে চার দেওয়ালে

ইচ্ছে গুলো রঙিন সূতোয় উথলে ওঠা রাতে।

বলেলে সখী তোমার সুখে থাকতে পারি সাথে।

 

(১৬/০৫/১২)

রণাঙ্গন থেকে

রণাঙ্গন থেকে

 

ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির জানলায় হিমবাহের মিছিল

দেখতে ডুব দিয়েছিলাম নাগরিক অধরে।

মেঠো অন্ধকার মুখে জোনাকির আলো

পথ দেখালো।

সেখানে লোভের সোপানে আঁচল লোটায় না

হায়দ্রাবাদী পার্ল বিবাদী বাগের পথে তৃপ্তির ফানুস

আগলায় না সাবধানী সমীকরণে।

পাঁজরচুর্ণ কল্পতরু নিয়ে চলেছি মানস সরোবর।

অনেক আকাশ হয়ত নেমে আসবে হাতের তোড়ায়।

বাতাসে কস্তুরীমৃগের ঘ্রাণ।

চুপি চুপি প্রেমের কথা

বলবে মাঝরাতের শিয়রে।

এক গণ্ডুষ গোবি সহারার জলে আলোকবর্ষ আদর

প্রলম্বিত বুকে সঞ্চিত যদি হয়।

হাসবে তুমি। সে মন্দ নয়।

 

অনেক খণ্ড যুদ্ধে আমাদের

ধারাপাত বিন্যস্ত হয়।

জীবনের সফল সময়।

সকলেই সৈনিক নয়

কেউ কেউ শহীদ বনে যায়।

 

(১২/০৭/১২)

রাতজ্যোৎস্না

রাতজ্যোৎস্না

 

আকাশ যেন রাত জ্যোৎস্নায়

নামল ধরায় ভালবাসার ভারে

বনফুলের ছটায় ছটায়

মাতল ধরা স্বপ্ন অভিসারে।

 

প্রান্তরেতে লাগল নাচন

বইল বাতাস শস্য দোদুল মাতে

বনে বনে লাগল কাঁপন

তারায় ভরা স্পষ্ট আঁধার রাতে

 

হৃদয় আমার উঠল নেচে

দূর আকাশে পাখির ডানার সুরে

নীড়ের নেশায় পাগল সে যে

ছুট লাগালো সারা জগৎ ঘুরে।

 

Joseph von Eichendorff এর "MONDNACHT"

রিমঝিম

রিমঝিম

 

যেদিন রূপকথার জ্যোৎস্না নামাবে তুমি-

ঠুংরির কন্ঠে বেহাগের সুরার মতোন

শত রজনীর রজনীগন্ধায় তোমার বুকের মুদ্রায়

তেপান্তরের মাঠে ছুটবে পক্ষীরাজ

হাত বাড়ানো শুকসারির কবিতার খাতায়

নোবেল পদকের দুন্দুভি বেজে উঠবে-

তোমার অশ্রুঝরা প্রেমের সম্ভাষণে

মোহন বাঁশির ছায়াপথ জুড়ে জেগে থাকবে সপ্তর্ষীমণ্ডল

পৃথিবীর সমস্ত প্রেমিকের বিনিদ্র রজনীর মতোন

আমাদের অহংকারী দেরাজের চাবি

তলিয়ে যাবে ভূমিকম্পের রিখটার স্কেলে...

ময়ুরকিরণ বৃষ্টি পেখম মেলা শ্রাবণের হাত ধরে

রত্নদীপার পাণ্ডুলিপির মতো, সাতরঙা ঘুড়ির আকাশে

আরো নীল এঁকে দেবে তোমার নাম করে

মৌসুমী বায়ুমণ্ডল শেষপ্রশ্নের উত্তরে

ভালোবাসা হয়ে ঝরবে তোমার মতো রিমঝিম

 

(১৭/০৮/১৩)

 

রূঢ়ভাষ

রূঢ়ভাষ

 

মুখ ঢেকে রাখি সন্ধ্যা নামা আঁধারে,

সারাদিন রোদের মন্থন, চোখে লাম্পট্যের প্রত্নতত্ত্বে-

 পূর্বপুরুষের শিলালিপির মতোন খুঁজেছে তোমারে।

 

দ্রৌপদীর শাড়িও শেষ হয়ে এলে

কৃষ্ণ বা ভীষ্ম লজ্জা পেতে পারে ভেবে উৎকন্ঠিত নয় আমার হৃদয়।

আমি সেই ভাবে খুঁজেছি তোমায়।

 

গোটা গোটা দিনের আলোর মত সুস্পষ্ট অক্ষরে

কুন্তীর নিরিবিলিতে লিখে যেতে আমার কবিতা

আমি সেজে উঠেছি আপন স্বাক্ষরে!

 

প্রবাহিত রূপের বন্যায় নয়। গুণপনায় ভরা নদীর সঙ্গমেও নয়

 প্রার্থিত কোনো আরতি। মননের গাঢ় চুম্বনের

অলিখিত আদরের মহাকাব্যেও নয় আমার এ সন্ততি।

 

জীবনের দৈন্দিন চড়ুইভাতির আযোজনে, উন্মুক্ত

প্রহেলিকার মতোই তোমার গোপন উষ্ণতা জুড়ে

উড়েছি উত্তপ্ত উন্মাদনার উন্মত্ত উচাটনে।

 

মুখ ঢেকে রাখা সন্ধ্যা নামা বিলম্বিত আঁধারে, সারাদিন

বিবস্ত্র রোদের মন্থন, চোখে লাম্পট্যের প্রত্নতত্বে

উত্তরপুরুষের শিলালিপিতেও খুঁজে নেবে তোমারে।

 

(১৭-০৯-১৪)

রূপকথা হয়ত নয়

রূপকথা হয়ত নয়

 

শঙ্খমালার মত মেয়ের চোখে

বর্ষণমুখরিত জ্যোৎস্নার গান

আয়ুর তটরেখায় জলপরী ঢেউ এসে

শঙ্খমালার মত মেয়ের কথা বলে গেছে

সেখানে সাত সমুদ্রের তেরো নদীর গান

স্বাতী নক্ষত্রের বয়সিনী শঙ্খমালার চোখে

ধ্রুবতারার রঙ লেগে আছে

শতদল পদ্মের মাঝে শঙ্খচূড় সাপের ফণাও

আজ বিমুগ্ধ হরিণের শিকার ভুলে

হিংস্র শ্বাপদ বিস্মিত রাতের

গন্ধে ভালোবাসার মন্ত্রে বিভোর

প্রজাপতি রাতে আলোর পতঙ্গ

হৃদয়ে মেলেছে পাখা

শিশির স্নিগ্ধ চোখে

মাটির বুকে উষ্ণতা বাসা বাঁধল শেষে

 

রূপকথা হয়ত নয়

প্রেমের আসন্ন সময়ে

বিন্দু বিন্দু শিহরণ বেয়ে

নেমে আসা তৃপ্তির হিসেবে

জমে ওঠে আনন্দের রামধনু

শঙ্খমালাদের সময় হয় তখন

 

(১৮/১০/১২)

রেজারেকশান

রেজারেকশান

 

অনেক আর্তস্বর আজও চিৎকার হতে পারে নি

অনেক প্রতিবাদ গলার স্বর পায় নি খুঁজে

অনেক ঝরাপাতা রাখেনি স্বাক্ষর সালোকসংশ্লেষের

কত কুঁড়ি বুড়িয়ে গেল, না ফুটে

ঘাস মাটির সবুজে

কোনো চিহ্নই স্থায়ী নয় জেনেও

অনেক বেদনা যখন কষ্ট হয় বুকে

তখন তোমার কাছে

আমারও হৃদয়

রক্তের মিছিলে যত শপথের হয়েছে মৃত্যু

যত স্বপ্ন পুড়েছে ষড়যন্ত্রের ব্যাভিচারে

সমস্ত শহীদের লাশকাটা কবরে

একটা গোলাপের তাজা কুঁড়ি আর

বারুদের রঙ এঁকে গেলাম

তবুও তোমার কথা ভাবিনি ঈশ্বর

বুজরুকে ভরেছে পৃথিবী

তবু মানুষই চেয়েছি মানুষেরই পাশে।

অনেক কবর খুঁড়ে দেখতে হবে

 মৃত আধমড়া বিপ্লবগুলো

আবারো ঘুরে দাঁড়াবে আমাদের কাঁধে

 মৃদু কণ্ঠ একটু জোরালো হলে

 

(৩১/০৮/১২)

যে কবিতাটি খুঁজতে চান তার শিরোনাম দিয়ে সন্ধান করুন