সাদা চাদর

 


সাদা চাদর

 

সাদা চাদরে বিছানা সাজিয়ে ছিলাম

দাগ পড়েনি কোনদিন

 

এইসব কথা আত্মজীবনীর পাতা জুড়ে

লেখা, বড়ো সহজ কথা নয়

 

সেখানে সব ফাঁক এবং ফোঁকড়

বেআব্রু হয়ে যাওয়ার ভয়

 

না হলে, আমিও অস্কার হাতে

দাঁড়িয়ে যেতাম একদিন!

 

©শ্রীশুভ্র ২৫শে জানুয়ারি ২০২৪

শূন্যতার ব্যারিকেড

 


শূন্যতার ব্যারিকেড

 

ঘুমিয়ে আছি, সুষুপ্তির মায়াজালে

নিরেট অন্ধকার, নিস্তব্ধ চরাচর

মহাস্থবির শূন্যতার ব্যারিকেড

….ছত্রভঙ্গ স্বপ্নেরা বিদ্ধস্ত তখন

 

শব্দের আশ্রয় ছেড়ে আরও বহুদূর

বিশ্বাসের মলিন খোলস ফেলে

না! কোন যুক্তি নয় তর্কও নয়

….হৃদয়ের পিছুটান উপেক্ষা করে

 

এই এক অনন্ত ঘুমে, চিরকাল

স্বপ্নহীন প্রতিবিম্বহীন শব্দহীন

মহাস্থবির শূন্যতার ব্যারিকেডে

.…ইতিহাস ডানা গুটিয়ে নিয়েছে তখন

 

©শ্রীশুভ্র ২৭শে জানুয়ারি ২০২৪

লাইনে আছি

 


লাইনে আছি

 

পরিযায়ী ছায়াদের অভুক্ত খাবারে

পিপীলিকার উচ্ছিষ্ট লেগে

মাথার উপরে গনগনে রোদ

স্থির নেত্রে বিকারহীন

 

বাকি’রা লাইনেই আছি বরাবর

সময়ের আগে কিংবা পরে

পরস্পরের পা মাড়িয়ে পরস্পরের

আগে, পেটে অদম্য খিদে

 

ইতিহাসের পাতার পর পাতা জুড়ে

পাতায় পাতায় উচ্ছিষ্টের দাগ লেগে,

বুদ্ধ কনফুসিয়াস মার্কস লেলিন

মৃত সব, শুধু আমরাই লাইনে আছি…

 

©শ্রীশুভ্র ২৮শে জানুয়ারি ২০২৪

 

যে’ দিন সে চলে গেল

 


যে’ দিন সে চলে গেল

 

বৃষ্টির পায়ে পায়ে পা গলিয়ে

ফোঁটা ফোঁটা দুঃখের মতো, একদিন

….সে চলে গেল

 

 

চলে গেল দমকা বাতাসের মতো

হঠাৎ, মনের চার দেওয়ালের সব আলো

…. ঝাপসা চশমার মতো আবছা করে দিয়ে

 

 

শিবরাত্রির সলতে নিভে যাওয়ার মতো

জমাট অন্ধকারটাকে নিশ্চিত করে

….সেদিন সে চলে গেল

 

©শ্রীশুভ্র ২৫শে জানুয়ারি ২০২৪

 

যাও তবে….

 


যাও তবে….

 

যাও তবে, চলে যাও

যেভাবে গেলে মাথা উঁচু থাকে

 

এই তুমি অন্য ভাবে গেলে

মাথা নীচু করে,

 

ভালবাসা ছোট হয়ে যায়

লজ্জা ঘিরে ধরে

 

তখন দিনান্তের শেষে

মুখোমুখি বড়ো কষ্ট, কষ্ট হয়….

 

©শ্রীশুভ্র ২৫শে জানুয়ারি ২০২৪

বাবার কথা জানি না

 


বাবার কথা জানি না

 

বাবার কথা জানি না

মা’কে দেখেছি, ছেলের দুধ গরম করতে

ব্রেসিয়ার খুলে রাখছে বিছানার পাশে

 

আকাশেরও সবটাই নীল নয়

ঘোলাটে ক্ষত নিয়ে ফ্যাকাশে চোখে

চেয়ে থাকে কত সময়

 

পরিব্রাজকের মতো নয়, চারদেওয়ালের

ভিতরে, মানুষের মানচিত্র আঁকতে

পুড়িয়েছি নিজের হাত’

 

সময়েরও সব সময় আগুপিছু

ঠিক থাকে না, কলুর বলদের মতো

ঘুরতে থাকে ভুল ঠিকানায়

 

তারপরেও যদি কিছু অক্ষর সাজাতে চাই

আমি বা অনেকে, ভালবাসা প্রীতি কিংবা অভিমানে

কবিতা লেখার সেটাই সময়

 

বাবার কথা জানি না

মা’কে দেখেছি, মাটির মতো

টগর বকুল শরতের শিউলি ফোটাতে

 

©শ্রীশুভ্র ২৮শে জানুয়ারি ২০২৪

 

 

প্রহর

 


প্রহর

 

মন্দিরের ধ্বজা দেখে ভয় পাই

ভীষণ এক ভয় জড়িয়ে ধরে আমাকে

 

নাগপাশের মতো কেবলই, আমি

আতঙ্কে প্রহর জপতে থাকি

 

©শ্রীশুভ্র ২৫শে জানুয়ারি ২০২৪

পথ

 


পথ

 

মহা শূন্যতার ভিতরে নিবিড় নৈঃশব্দ্য

জল স্থল অন্তরীক্ষ এবং অন্তরাত্মায়

 

শব্দহীন চৈতন্য জুড়ে সেই এক আমি

সময়ের ভিতরে সময়ের অতীত

 

প্রেম নয় বিদ্বেষ নয়, তবুও হৃদয়

আশ্রয়ের খোঁজে নিরন্তর, ক্লান্তিহীন

 

সেই এক পথ, পথের টানে পথে পথে

ঈশ্বরও নয় শয়তানও নয়, নিজের সাথে

 

©শ্রীশুভ্র ২৬শে জানুয়ারি ২০২৪

 

 

 

নিষিদ্ধ স্লোগান

 


নিষিদ্ধ স্লোগান

 

নিষিদ্ধ স্লোগান মুখে নিয়ে

ডানা মেলা চিলের দিকে

চেয়ে আছি,

রাজপথ ছেয়ে ফেলেছে

বাঁধা মজুরীর পুলিশ

 

মোড়ে মোড়ে বিবস্ত্র ব্যারিকেড

উদ্ধত লালবাতির সাইরেন

ভারী বুটের শব্দলহরী

শাসকের অনুশাসনে

কথা বলে যায়

 

নিষিদ্ধ স্লোগান কিছু

আমিও লুকিয়ে রেখেছি

সঙ্গোপনে অলিন্দ নিলয়ে

তাই ভয়ে ভয়ে থাকি

নিজেকে সামলিয়ে

 

©শ্রীশুভ্র ২৮শে জানুয়ারি ২০২৪

অদৃষ্ট

 

অদৃষ্ট

 

অদৃষ্টে কি লেখা আছে জানি না

সকলের মাঝে বসে আছি

মুখ দেখি, মুখোশও দেখি

বাণী শুনি, বুলিও শুনি

পরামর্শ নিই কখনো সখনো

বিপদে আপদে

তারপরেও উপদেশ দিয়ে যায় অনেকে

 

অদৃষ্টে কি লেখা আছে জানি না

সব পথের ধারেই ঠেক খোলা আছে

ঢাকের বাদ্য শুনি, ঢোল বাজাতে দেখি

তালে তালে ভিড় জমে যায়,

সেই ভিড়ে নিজেকেই খুঁজি

সময়ে অসময়ে

তারপরেও উপদেশ দিয়ে যায় অনেকে

 

অদৃষ্টে কি লেখা আছে জানি না

সর্বদা হাতঘড়িতে দম দিয়ে রাখি

পাছে পিছিয়ে পড়ি কখনো

লাইনচ্যুত হতে কে না ভয় পায়

তাই পায়ে পায়ে চলি, সকলের মাঝে

ভিড়ে, ভিড়ে থাকা ভাল

তারপরেও উপদেশ দিয়ে যায় অনেকে

 

©শ্রীশুভ্র ২৫শে জানুয়ারি ২০২৪

 

 

যে কবিতাটি খুঁজতে চান তার শিরোনাম দিয়ে সন্ধান করুন