নিষিদ্ধ ইস্তাহার
অক্ষর বৃত্ত
কাঁদছে কলম
বাঁধাঘাট।
গণতন্ত্র
আঁধার মোহন
বন্ধ কপাট।
নষ্টনীড়
মৃত জাতক
অশ্রুজল,
দীর্ঘশ্বাস
আঙুর ফল
খুড়োর কল।
সংশোধনী
শহীদ বেদী
লাল সেলাম।
ক্রুশবিদ্ধ
ক্ষমার বাণী
দেখে এলাম।
(০৬/০৭/১২)
নিষিদ্ধ ইস্তাহার
অক্ষর বৃত্ত
কাঁদছে কলম
বাঁধাঘাট।
গণতন্ত্র
আঁধার মোহন
বন্ধ কপাট।
নষ্টনীড়
মৃত জাতক
অশ্রুজল,
দীর্ঘশ্বাস
আঙুর ফল
খুড়োর কল।
সংশোধনী
শহীদ বেদী
লাল সেলাম।
ক্রুশবিদ্ধ
ক্ষমার বাণী
দেখে এলাম।
(০৬/০৭/১২)
নিসঙ্গ সংলাপ
আসমানী চাঁদের আলোটুকু বুক
পকেটে নিয়ে....
ব্যস্ত পায়ের ত্র্যস্ত
মিছিলে
সকালসন্ধ্যা হিসেবের ডন
বৈঠকে তোমার নাম।
সেই নাম ইতিহাসের তাজমহলে
আমিও খোদাই করে রেখে যাব কথা দিলাম।
সূর্যস্নাত রাত উচাটন রিক্ত
এই ভোরে।
সন্তানসম্ভাবনা নারীর মতোন
আমিও কবিতার জন্ম দিয়ে যাবো।
শরীরী মানচিত্রে কোনো
মতবাদের
জন্মান্ধ দলিলের স্বাক্ষর
থাকবে না দেখো।
এ আমার নিসঙ্গ শপথ।
শপথ বিক্ষুব্ধ শহীদদের
আত্মার বিস্মৃত বেদীতে।
মানুষের আশা ভরসার হতাশার
ইমারতে কোনো প্রত্যয়ের গাঁথনী থাকে না।
থাকে লোভ লালসা লাম্পট্যের
পোশাকি গোঁজামিল।
ইতিহাসে তাই
সভাকবির ডাক পড়ে নিত্য।
(২৯/০৩/১২)
নীলাঞ্জনা নীলে
শরতের বিকেল নিয়ে চোখে নীলাঞ্জনা নীল
শাদা হাসি ছড়িয়ে বাড়িয়ে দিল হাত
দেখা হয়েছিল কোনো এক বৈকালিক
বিতানে
বন্ধুবৃত্তের বন্ধনে। পরণে আকাশগঙ্গা শাড়ী
আঁচলে কাশফুলের মাতন।
চওড়া কাঁধে পরিব্যাপ্ত প্রত্যয়ে
আত্মবিশ্বাসের শুভ্র অবকাশ।
এক নদী ঢেউ নিয়ে সচল ছন্দে
হয়ত আমারই মুখোমুখি এসে দাঁড়ালে সে।
বিস্মিত অভিভুত আমি বিমুগ্ধ আনন্দে বাকরুদ্ধ।
এক আকাশ রামধনু বুকে সমস্ত বিকেল
তখন আমাদের জুড়ে দিল মানবসঙ্গীতে।
নদীর মত মানুষের জীবন।
ঢেউ ভেঙ্গে ভেঙ্গে। পার ভেঙ্গে
পথ করে নেওয়া।
ভালোবাসার প্লাবন বিমুগ্ধ
পলিতে প্রেমের রঙ ধরালে
নীলঞ্জনা নীলরা ফুটে ওঠে
এমনি কোনো শরতের বিমুগ্ধ বিকেলে।
তাদের ফেরাতে নেই হাতটি বাড়ালে।
(২৩/০৯/১২)
নোনতা জলের মেয়ে
আজকে আমার শরীরে প্রেমের
জোয়ার এসেছে।
আষাঢ় ভরা মেঘে এক সমুদ্র
নোনতা জলের মেয়ে
তুমি মিষ্টি হয়ে এলে।
মাধবীলতার পাতায় সবুজ সবুজ
জল এখনো টলমল।
আমার পিটারইংল্যাণ্ডের সুতো
তোমার মন ভেজানো চুমুর মানে
বুঝতে পারেনি আজও।
কাঞ্চন ফুল গুলো বাগানের
অভিমানী কোণে
আজ খেদ রাখেনি মনে।
শুভ্রহাসির হিল্লোলে তোমায়
নিয়ে তাতা থৈথৈএ মেতেছে।
শ্রেয়সী তোমার নাম
রেখেছিলাম
কার্তিকের নবান্নের দেশে।
আজ তুমি আমার নাগালের এত কাছে।
ফসল ফলানো স্বপ্নিল আবেশে।
তবু হয়তো জন্মের মানে মানুষের ইস্তাহারে
আজো অর্দ্ধস্ফূটই আছে।
হাজার বছর পরে এমনই
আষাঢ়ে শ্রেয়সী তোমায় নিয়ে
হয়ত কবিতা লেখা হবে।
সেদিনও নোনতা জলের মেয়ে
তুমি
মিষ্টি জল দেবে।
(২৩/০৬/১২)
নৌকাডুবির রাত!
তোমাকে ছুঁয়ে দেখেছি
সমস্ত স্থাপত্য শীতের
চুম্বন
হয়ে গিয়েছে!
যেন রোদ পায়নি ছয় মাস!
আদরের নৌকাডুবির পর
সমস্ত অবেশষ কিছুই কি
অবশিষ্ট থাকে আর?
(৩০/০১/১৩)
পঁচিশে বৈশাখ নয়, নিত্য নন্দিনী
অন্ধকারের জালের ভিতর
যত বেদনা সঞ্চিত
মৃত্যুবহ চেতনার সংক্রমণ,
অবরুদ্ধ বন্ধ দরজায়
চূর্ণবিচূর্ণ প্রত্যাশার রঙে
ব্যর্থ বিপ্লবের ইস্তেহার লটকে রাখে,
হে কবি তত সূর্যস্নাত
অমলিন রক্তকরবী নিয়ে
খুঁজেছি নিত্য নন্দিনী!
ছদ্মহাসি আর গুপ্ত চক্রান্তের সূতিকাগৃহ!
মর্মমূলে তাই
আর কোনো মন্ত্র অবশিষ্ট
নেই কবি!
বিশ্বাসের মজ্জায় ঘূণপোকার সংবর্ত বিব্রত করেছিল
তোমারও নির্জন সৈকত একদিন!
সবটাই অনন্ত বিস্ময়ের সকাল নয় কবি,
এ পৃথিবীর!
হিংস্র রাতের শাসানি
তোমার অক্ষরে ক্ষতবিক্ষত
দিনলিপি লিখে যায় আমার!
হয়তো তারপর
সমস্ত সংগ্রামের ব্লুপ্রিন্ট
জলের দরে বিকোবে কালোবাজারে!
তবুও অমলিন রক্তকরবী নিয়ে খুঁজেছি নিত্য নন্দিনী!
পথরেখা
সব নৌকা ঘরে ফিরে এল মাস্তুলের
ভগ্নাবশেষ নিয়ে।
সমুদ্র জোয়ার পায়ের তলায়
তবুও ভেজাতে পারেনি বিশ্বাস
মুখর কার্পেটের নিপাট বুনন।
কত যুদ্ধ জলোচ্ছাসে সংসার
ভেসে গেছে ভাব।
নির্বাক কামান সাক্ষি থেকেছে সব ষড়যন্ত্রের।
প্রেমিকের ঘর থেকে
প্রেমিকারা ক্রমে চলে গেলে
নিস্তবদ্ধ আধাঁরের প্রদীপের
আড়ালে।
তারপরও মরুভুমি মরিচিকা আঁকে।
অনির্বাণ স্বপ্নের সাঁকোতে।
আমাদের মুখোশ টাঙানো রাতে
কত ফসিল চমকে চমকে ওঠে।
কত শপথ গড়াগড়ি
খেল সন্ধিপত্রের জৌলুসে।
কত গোলাপ কুঁড়ি
কাঁটা হয়ে ঝরেছে রাত্রি
তৃতীয় প্রহরে।
তবু এই দেখো আমি
দাঁড়িয়ে তোমার পথের ধারে
সন্ধ্যা অবসন্ন আধাঁরে
সন্ধিপত্র নয়।
শপথের ভড়ং ও নয়।
আর একটা শুধু তাজা কুঁড়ি
হাতে।
(০৯/০৭/১২)
পরকীয়া পেড়িয়ে
অনেকটা শারীরীক উত্তাপ
ছেঁকে নিয়ে
যে গোলাপটা ফুটিয়েছি।
নরম কাঁটার উষ্ণ আঁচড়ে দেখ
আমার গোলাপী স্বাক্ষর তোমার
নরম বুকে পরম নিশ্চিন্তে।
আমাদের আলিঙ্গনের আসমানী
ভোরের নরম কুয়াশা
হয়ত কেটে যাবে একদিন।
হয়তো শিশু রোদ তোমার নরম
বুকে আমার উষ্ণতা মেখে
ভালোবাসা ছড়াবে আরো।
আরো আলো, আরও দিগন্ত প্লাবি দুরন্ত উদ্দীপনায়।
অনেক আলোকবর্ষ দূরের
শিশুরাও একদিন সে আলো গায়ে
মেখে
বয়সসন্ধিতে এসে, প্রেমের বর্ণপরিচয়ে শিখে
নেবে আমাদের।
হয়ত সেদিনের ভোরে সংবাদ
শিরোনামে
বেআব্রু ক্যামেরা ঝলসাবেনা
আজকের মতো।
সূর্য্য আরো আলো হয়ে
আমাদের উষ্ণতায় প্রেমের কবিতা
পড়বে সবার শরীরে।
গোলাপী প্রেমে পড়বে না নিষিদ্ধ কাঁটার অশ্লীল আঁচড়।
(২৮/১১/১২)
পরিত্যক্ত সংস্করণ
পরিত্যক্ত সংস্করণের পাতায় ভালোবাসার
অক্ষর অশ্রুসজল।
এখনো স্বরবৃত্ত দলবৃত্তের
ফাঁদে
আকণ্ঠ নিমজ্জন।
রূপকে অনুপ্রাসে ঘুমোয় বছর
ভর।
সূর্য ওঠা ভোরের গন্ধে
সম্পাদকের তাড়া নেই আর।
বইমেলার ধূসর স্মৃতিতে অন্ধকার
মুখে
শব্দের কঙ্কাল ছাপার কালিতে
মুখ
ঢেকে রাখে।
কি লজ্জা তোর।
শাদাকালো এই তো জীবন।
শুয়ে
থাক চিৎ হয়ে।
চিন্তার কপালে ভাঁজের রেখা যুগপৎ
অস্থির।
ও নিশ্চিত কাব্যের পর।
তবু সন্ধ্যার নিয়ন বাতির
দাবি এসে নিয়ে যাক পাঠকের মন।
অনুভবে হৃদয় সকাতর।
ভালোবাসার ঠোঁটের
স্বরক্ষেপণ কণ্ঠের জাদু দরদী মননে।
ভালোবাসা বিশ্বাসে প্রত্যয়ের
ভিতে,
যে স্বপ্নের জাল বুনে জীবন
পার কবিবন্ধু
আজ দরদী অন্ধকার।
(১৭/০৩/১২)
পাখির নীড়ের মতো নয়
বিদিশার নিশায় তোমার মুখে
শ্রাবস্তীর কারুকাজ দেখার মতো
দৃষ্টি
নেই মেয়ে চোখ ভরা দুই চোখে!
পাণ্ডুলিপির আয়োজনে
স্মৃতি রাখেনি সুখ নিঃশ্বাস!
কোনো রমণীর আঁচল ঝর্ণা হয়ে নামেনি
বিশ্বাসের স্থির বিন্দুতে!
সামুদ্রিক জলচ্ছ্বাসের মতো সোহাগী ঢেউ এসে
আছড়ে পড়েনি দিনের অলিগলিতে!
বিম্বিসার অশোকের জগতের বনেদী নুপুর বাজেনি
রোজকার চৌকাঠে!
কিংবা ধর সুজাতার পরমান্নে
আলোকিত হল না বোধিবৃক্ষের বেদী!
নির্গুণ তপস্যার মায়ামৃগ
হরিণীর স্বপ্নের মতো,
জীবন এল গেল, হল না রমণ!
সব নদী ফুরিয়েও রয়ে যায় দহ!
সমুদ্রের গর্জন থেকে
নাগরিক কোলাহলের প্রদাহে
তোমার মুখের মত মেয়ে
পাখির নীড়ের মতো চোখ
তুলে বলনি কোনো দিন
এত দিন কোথায় ছিলেন?
(২৬/০৭/১৩)