সোহাগ

সোহাগ


মাছরাঙা আলো জ্বেলে দিয়ে

বিনম্র সন্ধ্যায় তোমার আদর

নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে চলেছে!

ঘুঘুডাঙ্গার মাঠে ভূবন নেমে আসা বিকেলে

আমার ঘুড়ি উড়েছিল একদিন

সূর্যের অভিমুখে

জলডিঙ্গি মেঘ সাঁতরিয়ে

শব্দের মিছিলে

মিলনের সব রাত এসে জড়ো হলে

আমাদের গোলাপে রূপকথা

নোবেল পেতে পারে!

 

(১৭/১০/১২)

স্কুপ নিউজের শিরোনামে

স্কুপ নিউজের শিরোনামে


মধ্য বয়সের ধারাপাতে মুদ্রাদোষের আনোগোনা,

অনেকটা পানাপুকুরের ঢেউয়ের মতো

একদিকে ঠেলা দিলে উল্টো দিকে এগিয়ে আসে

কবিখ্যাতির অর্থানুকুল্লে বাঁধানো দাঁতের হাসির মতো

নিশ্চিন্ত তাকিয়ায় হেলান দিয়ে,

অটোগ্রাফ দিতে দিতে

ভক্ত পাঠিকার নরম হাতের সান্নিধ্য:

মেদে মেদে মৌতাত জমিয়ে তোলে

কোথাকার শব্দের শৃঙ্খল দোতারার শরীর জুড়ে

তাথৈ করে উঠলে-

মধ্যবয়সের উঠানে

নতুন করে আকাদেমী পুরস্কারের লোভ

পুরোনো শব্দের শিকলে নতুন চুনকাম

মান্ধাতার বাবার আমল থেকে

আমাদের বীর্যপতনের শব্দে

কবিতার পলেস্তরা খসে গেলে দেখা যেত

খবরের ভিতেরর খবর

স্কুপ নিউজের শিরোনামে

অথৈ শব্দের উজানে নয় ---

যাত্রা করেছি খ্যাতির নৈঃশব্দে

 

(০৯/০২/১৪)

স্ট্যাচু

স্ট্যাচু 


ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি বুকে নিয়ে

সন্ধ্যা নামল ধীর পায়ে।

আষাঢ় ভরা তৃষ্ণা নিয়ে আমার পাঁজর

দিন গুনেছে অনেক।

মানুষের ঘরবাড়ির স্বপ্নে মধ্যরাতের নিশ্চিন্তি

যত তীব্র তত যুদ্ধ

নিশ্বাস ফেলে ঘাড়ের কাছে।

 তোমার ঘাড় উজিয়ে চলার মধ্যে যে ঔদ্ধত্বটুকু ধরা আছে , সেও

সন্ধিমনে দাঁড়ায় যুদ্ধের কাছে।

অথচ নদীতে নামা সদ্য ঝর্ণার মতো

আমাদেরও স্বাধীন স্বপ্ন ছিল একদিন।

সাধ পূরণের ঢেউ গুলো কবে যেন গর্বের চরায় ঠেকল।

গতিহারা সকালের রোদ

আলো নয় উত্তাপ নয়

নিছকই সময় জানান দিতে থাকে।

ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি বুকে নিয়ে সন্ধ্যা

ফিরে চলে গেলে

আমাদের পাঁজরে আজ আর আক্ষেপ নেই কোনো।

তবু অপেক্ষার অভ্যাসটা

আজও হারিয়ে যায় নি দেখো।

 

(২৪/০৬/১২)

স্বপ্ন-সাধ-সাধনা

স্বপ্ন-সাধ-সাধনা


পুরুষ নারীকে ঘিরে ঘুরে গেলে

আলোকিত হয়ে ওঠে দিন-

ভালোবাসা খুঁজে পায় জীবনের মানে

নয়তো মৃত্যু হামাগুড়ি দেয় হৃদয় গভীরে

পুরুষের আহ্নিক গতির নৃত্যে ও গানে

পৃথিবী জন্ম নেয় নারীর শরীরে

 

সেই শিশু সবুজের গন্ধ মেখে নীল চোখে অনন্তকে ডেকেছে

ঈশ্বরের প্রতিমা গড়েছে মাটির ধানে

অতল সাগর থেকে পর্বত শিখরে ক্লান্তিহীন গ্লানিহীন যৌবনের টানে

কেবল জীবন আঁকে রঙের ভিতরে

 

অই রঙ বুকে নিয়ে পুরুষের হৃদয়ে

নারীকে ডেকেছি আমি

ইতিহাসের পটে আগামীর ধ্যানে

তাইতো রণ রক্ত সফলতার পরেও

মানবতার তীরে অহংকার ধুয়ে নিয়ে ভালোবাসার টানে

মানুষের স্বপ্ন-সাধ-সাধনা  সব মানুষকে ঘিরে

 

 (১৮/০৯/০৮)

স্বপ্নদোষে দেখিনি তোমায়

স্বপ্নদোষে দেখিনি তোমায় 


যে সব গোপনাঙ্গ সঙ্গ করিনি কোনোদিন

স্বপ্নদোষের মতো ঊরুসন্ধীর প্রত্যাশায়।

মগ্ন বৈভব রাত্রির পক্ষীরাজ

ছুটছে ছুটছে ছুটছে

স্নেহ নয় মমতা নয়

নয় ভালোবাসার উতরোল মোহ।

ক্লান্তি ক্লান্ত রিক্ত সুসময়

সভ্যতার শিকড়ে প্রোথিত বিস্ময়।

 তাই নিয়ে ভালো আছো কি তুমি?

ভালো আছো অন্তরে ভিতরে?

সঙ্গসুখ বাহিরে?

 

আদিগন্ত চরাচর জুড়ে

লোভ লালসার ঝলকে ঝলকে-

নীহারিকার জন্ম মৃত্যুর পলকে পলকে-

ঝর্ণামুখ খুলে যাক

খুলে যাক বে আব্রু বারবণিতার জমাট পাথরকুচি বৃষ্টির মতো।

 

বন্ধু তোমার কান্না ধোয়া অশ্রুকণা কটা

গর্ভফুলে রেণু করে রেখো।

নির্বিকল্প সমাধি থেকে উঠে আসুক

এক কণা সূর্যমুখী পরাগ।

প্রেমের সুরভী বুকে। প্রেমে।

 

(০৫/০৫/১২)

স্বপ্নবাসর

স্বপ্নবাসর


বৈতরণীর পাড় থেকে নক্ষত্রের জন্মের ইতিহাস নিয়ে

উকিঁ দিল রোদ আমাদের নির্বাক ইজেল

সাদা কালোর দীঘল সীমানায় বাকরুদ্ধ বিস্ময়

সেই রোদ কয় টুকরো আদর রঙে মৃত্যুর সাথে

খেলে গেলে একটা দুটো  চন্দ্র সূর্য পৃথিবী;

সমুদ্রকন্যাদের সময় হয় তখন

কবিতার অক্ষরের মতো মানুষের সীমানায়

জলকন্যারা বর্ণমালায় দিয়ে গেলে উত্তাপ--

আমাদের স্বরলিপি জুড়ে হেমন্ত বসন্ত

সবুজ জুড়ে কোমলগান্ধার সময় মানবিক আলো হাতে

নারীর বুকের মতো হলে,

প্রতিটি মানুষের জন্য আমারও হৃদয়

শতাব্দীর ঠোঁটে সহস্রাব্দের সমস্ত ঝংকার

অমৃতমন্থনে কুরুক্ষেত্র হিরোশিমা পেড়িয়ে চলুক

সক্রেটিস আলোর পিছনে

বৈতরণীর সীমানায় দেখা হোক

কয় টুকরো রোদের সাথে এবার

 

(২৭/০৬/১৩)

স্বপ্নবীজ

স্বপ্নবীজ

 

তোমার এক চিলতে স্পর্শের

আলিঙ্গন স্বপ্ন

নুপূর ডোবা জলের

জল ছলাৎ নদী।

 

নাভি ডোবা শীৎকারে

মশারির উল্লম্ফন

চেনা স্বর গুলো আজো

নিশি ডাকে রাতভর।

 

খুঁজতে খুঁজতে

যৌবন জরা’য় বয়স মন্থন

বীজের মধ্যে বৃক্ষের স্বপ্ন

জ্যোৎস্নার রঙে।

 

কুয়াশার গোপনে

অহংকারের প্রত্যয়

মানুষীর ওপরে

মানুষের ঢঙে।

 

(০৪/০১/১২)


স্বপ্নভঙ্গে পর

স্বপ্নভঙ্গে পর

 

প্রিয়জনের মুখ দেখে স্বপ্ন ভঙ্গ হলে

তবুও স্মৃতির ঝাঁপিতে

 ডুগ ডুগি বাজাতে পারেনি নিয়তি

খণ্ড বিখণ্ড সূর্যের র্আলাপনে বিন্দু বিন্দু জ্যোৎস্না জমিয়ে তুলেছি

কামধেনু চাইনি কখনো

গোধূলিসন্ধির নৃত্যে খুজেঁছি জীবনের আনন্দ

 

হয়তো জন্ম পরিচয়ে ভুল ছিল

 ভুল ছিল ক্রোমজমের অসতর্ক ডি এন এ বিন্যাসে

হয়তো বোধোদয় পেরোনো যৌবনের রঙ ছিল প্রত্যয়ের

স্বপ্নীল পলাশ

হয়তো জীবনের অধিকার দুঃখের কাছে নত

তবুও অমূল্য সময়

 

তাই সূর্য পুড়লেও পোড়েনি ছাই

কবর নিয়েও কোলে, মটিতে ঘুমোয় সবুজ

অনন্ত নক্ষত্রবীথিতলে তোমার অমাবস্যা ঠোঁটের মরুভূমিতে

 আমার পূর্ণিমা

তাই বিন্দু বিন্দু চুম্বন হয়ে ঝরে ছিল

তুমি পাও নাই তবু টের

 

(২২/০৪/১২)

স্বপ্নভঙ্গের রাতে

স্বপ্নভঙ্গের রাতে

 

শতাব্দীর আলো জ্বেলে

একবার আমার দিকে ফিরো মেয়ে।

নিবিড় প্রেমের বাঁশিতে

ভরেছি তোমার নাম।

সে নামে যত রোদ দিয়ে গেছে অবিরাম,

পৃথিবীর মনীষীরা সব;

আমার নিরালা সংলাপে

তার আলাপন সব জমিয়ে তুলেছি দেখো

শুধু তোমারই জন্যে।

শেষ রাতের

প্রথম ট্রেনের শব্দ লাইন দিয়ে গড়িয়ে গেলে

আমিও হেঁটেছি যমুনার তীর দিয়ে।

তাজমহলের নীল নকশা নিয়ে।

 

(১৭/১০/১২)

স্বপ্নভরা কানায় কানায়

স্বপ্নভরা কানায় কানায়

 

রাত নেমেছে আঁধারচুঁয়ে বস্ত্রভেজা ঘামে

প্রিয়ার আদর সোহাগমাখা আজ যে এল খামে

রাতনিরালা বিজনবাসে প্রিয়ার হাতে লেখা;

ভালোবাসার সহজপাঠ তাহার কাছেই শেখা

প্রিয়ার সাধে বাজিয়ে চলি রাধারমণ বাঁশি

আঁধারচিরে ওঠে জ্বলে আমার প্রিয়ার হাসি

ঢেউ উঠেছে ভালোবাসার প্রিয়ার বক্ষজুড়ে

ঢেউয়ের মাথায় নাচন তাহার আমার জীবন ঘুরে

 

আমার প্রিয়া আঁধার রাতে অঙ্গজুড়ে গান

অধর সুখের কল্পনাতে সোহাগ করি পান

আমার প্রিয়া রাত শরীরে স্বপ্ন নীলপরী

কলজে পোড়া স্মৃতির আগুন সুরাপাত্র ভরি;

রোজ নিশীথে প্রিয়ার মুখে আদর করি জরো

ঘুম হারানো দু-চোখ জুড়ে কল্পনা আবারো

 

সত্যি যদি এমন হতো প্রিয়ার রাতের ঘুম

আমার স্বপ্নে বিভর থাকে সারা মরশুম?

 

(২৭/০৮/১২)

যে কবিতাটি খুঁজতে চান তার শিরোনাম দিয়ে সন্ধান করুন