আদিম
রমণীর মতো
[এক]
এক পৃথিবী ব্যাসার্ধ ঘুরে দেখেছি, আদিম রমণীর মতো
নিটোল দুটো চোখের পাতায়; হরিণেরা খেলা করে না আর।
বিপন্নতার কৌটোয় স্মৃতির ঔষধি হয়তো শেষ।
অবসন্ন তৃণের বুকে নাগরিক কর্কট রোগ
সূর্যের ছায়ায় ম্লানমুখ তুলে হয়তো ধর্মগ্রন্থের পাতা ওল্টায় রোজ।
তবু ব্যাবিলন থেকে মদিনা, কাশী থেকে কুরুক্ষেত্র
সব চুপ, সমস্ত অক্ষর জুড়ে নিস্তব্ধ বুলেটের ঘ্রাণ
শেষ কথা বলে চলে যায়।
প্রেম আর বিষাদের মাঝে জেগে থাকা অশ্রুবিন্দু জুড়ে
আর কোনো মহাকাব্য নয়,
ম্যানিফেস্টোর পোড়া পাতায় মাংস পোড়া দগ্ধ প্রত্যয়।
এক পৃথিবী ব্যাসার্ধ জুড়ে শুধু বিদগ্ধ সম্মেলন।
[দুই]
জীবনের অনেকগুলো দিন কেটেছিলো নিরাপদে,
রমণীর স্তন থেকে নিরাপদ ঠোঁটের কিনারায়।
বাসী খবরের মতো সেসব আজ রিক্ত যোনির আসেপাশে
ভিড় করে, ঝাঁচকচক আমাদের শহরে।
এযুগের তুলিতে যে কটা রঙ খুঁজে পাওয়া গেল
ভালবাসা আদরের ধারাপাতে, পৃথিবীর ব্যাসার্ধ জুড়ে
তবু দেখি ঘূণেদের উৎসবে সকলের অবাধ আমন্ত্রণ।
ইজেল জুড়ে তাই ছায়াপাত ধর্ষকের।
আলো অন্ধকার গায়ে মেখে, সময়ের সিঁড়িতে
অশরীরী আলপনা জুড়ে দেখেছি মহাপুরুষদের ব্যর্থ আনাগনা শুধু।
তবু মুড়িমুড়কির মতো স্লোগানের আড়ালে
চাপা হাসি শুনে ডুকড়ে উঠেছে গোনাগুন্তি পাঁজর।
[তিন[
মহাকাশ পরিক্রমা সেরে, অন্ধকার ছায়াপথের নিঃসঙ্গ রাত
এক পৃথিবী ব্যাসার্ধ জুড়ে তারপর বোধিবৃক্ষের তলায়।
আমাদের বর্ণপরিচয়ের প্রথম ভাগ থেকে সমস্ত সংবিধান
দেখে চোখের বিপর্যয়, সুজাতাকে চেয়েছে হৃদয়ে।
আবারো আদিম রমণীর মতো নিটোল গড়নে
বাইবেল ত্রিপিটক কিংবা কোরাণ
সূর্যে সূর্যে চলে যদি? নব বসন্তের কলির মতো
রঙ ধরুক বেদে বেদান্তে।
সংঘ নয়, কি হবে শুকনো অক্ষরে?
অন্ধকার যোনির উৎসমুখ থেকে নিরন্তর আলোর অভিমুখে
খুলে যাক আগামী শতক। আদিম রমণীর নিটোল
স্তনের মতো, সুজাতার পরমান্নে!
(০৭-০৫-১৪)