স্বাধীনতা তোর থাকুক জারি লড়াই নিরন্তর....

স্বাধীনতা তোর থাকুক জারি লড়াই নিরন্তর....

 

নীল আকাশের ডানায় ওড়ে অনন্ত উচ্ছ্বাস

বাংলাদেশের হৃদয় জুড়ে

স্বাধীনতা তোর বাস

 

স্বাধীনতা তোর ফেব্রুয়ারীর একুশ হয়ে জ্বলা

মুখের ভাষার কলধ্বনি

মনের কথা বলা

 

স্বাধীনতা তোর রবি নজরুল শামসুর রহমান

প্রতিবাদী কণ্ঠ সুধার

অবিনাশী গান

 

স্বাধীনতা তোর দৃপ্ত তেজের মুখর মুগ্ধতায়

বাংলাদেশের হৃদয়বীণা

তোর সুরেতেই গায়

 

স্বাধীনতা তোর শহীদ মিনার ৩০ লক্ষ প্রাণ

মারের বদলা পাল্টা মারে

রক্তে ভেজা স্নান

 

স্বাধীনতা তোর মুক্তিসেনার অদম্য সংগ্রাম

ক্যালেণ্ডারের তারিখ গুলো

প্রজ্জ্বল অবিরাম

 

স্বাধীনতা তোর পতাকা সবুজ রক্তিম সূর্য্য

জয় বাংলা জয় বাঙালি

অনন্ত শৌর্য

 

(২৫/০৩/১২)

স্মৃতির ঘুড়ি

স্মৃতির ঘুড়ি

 

শৈশবের হলুদ পাতায় উচ্ছ্বল গোধুলির রঙে

একটি বালিকার মুখ আঁকা আছে

বর্ষা ভেজা মাধবীলতায় স্নান করা দুষ্টুমি চোখ

ঝর্ণাদৌড় পায়ে এক বাংলা সবুজ মাখা চঞ্চলতা

বয়সসন্ধির কৌতুহল ফোটা পোশাকে

জীবনের অপার বিস্ময় যেখানে কেবলই মুগ্ধতায় ঝরে

শরৎ শিউলীর মতোন স্বপ্নের ঘুড়িতে

রাতজাগা রাজপুত্তর যখন নেমে আসে তার বিমুগ্ধ চোখে

তেমনই এক চৈতালী সকালে তাহার সাথে দেখা

তাহার উন্মন মাধুরীর পরিসরে

সমস্ত দিনের অভিপ্রায়ে ভালোলাগা

বাঁশি হয়ে বেজে ওঠে যখন তখনই এমন হয়

জীবনের মানে যদি রেলগাড়ী হয়;

ক্রমাগত স্টেশন বদলায়

তারপর যত মুখ আসে যত ঠোঁট আদরের নিবিড় সময়

যত ভিড় জীবনের এভারেস্ট চূড়োয়

তত যেন তাকে মনে হয়

 

(১১/০৭/১২)

স্মৃতিসৌরভ

 স্মৃতিসৌরভ

 

মৃত্যুনদীর ঢেউ ভেঙ্গেছো তুমি

 শ্রাব দিনের সন্ধ্যা তারার সাথে

স্মৃতির খেয়ায় আজকে যত কথা

তোমার সাথে নিভৃত সংলাপে

 

তবুও দেখ সেই তো তুমি আজ

আমার মাঝেই চলছে তোমার কাজ

এই যা কিছু লিখছি হাবিজাবি

জীবন খোঁড়ার তোমার আমার চাবি

 

এই যে আমার দু হাত দিয়ে ছোঁয়া

আবিশ্ব এই প্রেমের তরী বওয়া

দুঃখ দিনের দারুণ দহন তাপে

উতলা হওয়া, সেওতো তোমার মাপে

 

এক জীবনে তোমার কাটা পথে

কতজনাই চলছে জয়রথে

সে আনন্দে তোমারই পরশ পাই

কে বলেছে কোথাও তুমি নাই?

 

আজকে তোমার চলে যাওয়ার দিনে

আজকে তোমার স্মৃতির স্মরণে,

তাকিয়ে দেখি ভূবন জোড়া আলো

হয়নি কোথাও এতটুকুই কালো

 

এই বিশ্ব মৃত্যু অভিমুখে

যতই চলে দুঃখে এবং সুখে

জীবন তোমার অবিনাশী গান

মৃত্যু ধোয়া অনিঃশেষ প্রাণ

 

(শ্রাবনের এক দিনে)

জুলাই ২১’ ২০১২

হক

হক

 

সামাজিক বিন্যাসগুলো  সুন্দর নয় জেনেও

মরণ কামড় দিয়ে গড্ডালিকাতেই আছি

ঝোলের লাউ অম্বলের কদু বলে তুমি গাল দিয়ে যেও

আমি বেদের গালে সাপের মুখে চুমু খেয়ে যাবো

জেডপ্লাস নিরাপত্তাবলয়ে যাদের মসনদে বসাই

তাদের প্রসাদে আমারও ভাগ আছে

বৈদ্যুতিক চুল্লীতে আগুনের পরশমণি পারেনি পোড়াতে অর্থ বিত্ত গুপ্ত রোগ

তাই পূর্বপুরুষের সংক্রমণ উত্তরপুরুষে দিয়ে যাচ্ছি দেখ

আমাদের ক্রোমোজোমে সংবিধান থেকে আইনি ধারায়

মুখ শোঁকাশুঁকির সুবন্দোবস্ত আছে

তুমি বোধোদয়ের পাতা উল্টাতে পারো

মালা দাও জন্মদিনে মহাপুরুষ অবতারের গলায়

আমি ফুলের বরাত নেব

 

কি পবিত্র এই দেশ দেখ

গঙ্গাজল আচমনে তুমি আমি সত্যবাদী

জনপ্রিয়তায় পার পেয়ে যায় খুনি

 

 (০৬/০৪/২০১৩)

 

হবো ইতিহাস

হবো ইতিহাস

 

ডুমুরফুলের সুবাসিত সম্ভাষ

দুমুখো হৃদয়ের পল্লবিত আদুরে ডানায়

অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি

শুভ্রশোভিত ধুতির ভাঁজে ভাঁজে ভোটের নির্ভুল অঙ্ক

এদেশের বুকে গণতন্ত্র নেমেছে

তবুও মিছিলের পায়ে পায়ে আমিও হেঁটেছি

অন্ন বস্ত্র বাসস্থান পকেটে নিয়ে

মাথার মধ্যে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা কুল কুল

 

কিন্তু এপ্রিল ফুলের জনতা বোঝে না সে সব

উত্তুরে হিমেলে দাবদাহ বন্যার প্লাবনের মতো

শত্রুতার হাত বাড়িয়ে ধরে আত্মীয়ের মতো নিরুপ্রদবের

উদাসীন হাতে

 

ক্ষমতাসীন প্রলেতেরিয়েতের রুচি শিক্ষার আসরে সাদর আমন্ত্রণ

নয়তো ওরা থেকে যায় ওধারে সব রং মুছে গিয়ে তৈরী হয় রাজপ্রাসাদ

প্রচারের আলো ডেকে নেয় ঠিক সময়মতো

বিপ্লব অবুঝ নয় তাই ঘুম

 

(২৮/০৪/১২)

 

হয়ত স্বপ্ন নয়

হয়ত স্বপ্ন নয়

 

ক্লান্ত রাতের নিবিড় কোল ঘেঁষে তোমার একলা স্বপ্নেরা

যখন আকাশের নীলে প্রথম ভোরের তুলি বোলায়-

আমার দু-চোখের ঘুম জড়ানো দুষ্টুমির মেঘগুলো 

তখন ঠিকানা হারায় সাত সমুদ্র ঢেউয়ের নাচনে।

 

সব রাতের তারা যদি এক হতো!

সব আকাশের ভাষা! সব ফুলের মধু!

আমাদের রঙতুলির সব আঁচড় মৃত্যুর বুকে চুমো খেয়ে

তাথৈ আনন্দে সব প্রশ্নের উত্তরে-

লিখে দিত, ভালোবাসি ভালোবাসি............

 

এই সব টুকরো কথাগুলোর ভাঁজে তুমি আমি একদিন

এক পৃথিবীর সমস্ত কোলাহল ছেড়ে

আমাদের একান্ত অক্ষরে অপলক-

পরস্পরের পলকে ধর যদি বলেই ফেলি-

ভালোবাসি!  আরও একটু ঘন হয়ে আসি?

 

(১২-১২-২০১৪)

 

 

হরপ্পা পেড়িয়ে নাগাসাকির দিকে

হরপ্পা পেড়িয়ে নাগাসাকির দিকে

 

প্রেরণার শুশ্রূষা ছাড়া দূব্বার বুকে জমে না সবুজ

আলো পতঙ্গের মত মৃত্যুতে

তবুও জীবনের মানে উষ্ণতা ওম

অনুপম অনুভবে স্পর্শ উল্লাস

উৎসবে বেদনায় জলপরী নারীর টানে চলেছি

হরপ্পা পেড়িয়ে নাগাসাকির দিকে

 

প্রেরণার শুশ্রূষা ছাড়া ইতিহাস মানেই বিচারের বাণী

নীরবে নিভৃতে কাঁদে

দূরন্ত ঝড়ের মুখোমুখি তবুও শিকড়

মাটিতে মুখ রাখে রোদকণা লোভে

স্বপ্ন সাধ সাধনায় নারীর টানে চলেছি

হরপ্পা পেড়িয়ে  নাগাসকির দিকে

 

প্রেরণার শুশ্রূষা ছাড়া বোধিবৃক্ষে হয়না তীর্থ

লাঙলের ফলায় নবান্নের ঘ্রাণ

দূর্ভিক্ষ মহামারীর মুখে তবুও মানুষ

প্লাবনে নৌকা ভাসায় ঠিকানা ধরে রেখে

রূপকথা অলীক জেনেও নারীর টানে চলেছি

হরপ্পা পেড়িয়ে নাগাসাকির দিকে

 

 (২২/০৫/২০১২)

 

হলুদ ঘাসের দেশে

হলুদ ঘাসের দেশে

 

কেবল আমি হাত বাড়ালেই সূর্যমাখা দিন ভেঙ্গে ভেঙ্গে

মেঘের জঞ্জাল

সুনয়নীর চোখের উঠোনে

ভূমিকম্পের মত দূর্দৈব

আমার পা ডোবানো জলে

হাঙর কুমীর নয়, মরা নদীর বালি শুয়ে চুপচাপ ঘুমোয়

অস্ফূট শেফালীর গানে পাপড়ি ঝরা সকাল

বিষন্ন ভৈরবীর একতারায় ম্রিয়মান হাই তোলে

আমার হাতের আঙ্গুলে ভালোবাসা বিশ্বাস গুলো সব

ভাঙ্গা কাঁচের মতো রক্তপাতে ঝনঝন করে বেজে ওঠে

প্রেয়সীর শাড়ীর ছন্দের মত প্রাত্যহিক রোজকার চেনা গল্পের প্লটেও

দুঃশাসনের পদাবলী সংঘর্ষ গ্লানির ক্লান্তি জুড়ে

আমার নাম রেখে যায় খোদাই করে

মহাপুরুষদের বাণীগুলি

আমার পদচারণায় হলুদ ঘাসের মতো, স্মৃতি

সভ্যতার কালসর্পযোগ আমার নামাবলি গায়ে

ইতিহাসের পাতা ওল্টায়

 

(০৮/০৭/১৩)

 

হারানো রেলিং

হারানো রেলিং

 

আমার হারানো সময়ের হাত ধরে তুমি পথ হাঁটছো পথে

রোজকার সূর্যে বিশ্বাসটা সেঁকে রেলিং দিয়েছিলাম

খণ্ড বিখণ্ড আশালতার নড়বড়ে ভিতে

সারিবদ্ধ মিছিলের সঙ্গীতের সাথে উদ্বিগ্ন গলা মিলিয়ে

আমার হারানো সেই রেলিংএ ভর দিয়েছ তুমি আজ

জীবনের ড্রইং রুমে সাজানো ট্রফি গুলিতে

হয়ত বা লেগেছিল পরাজিতের দীর্ঘতর শ্বাস

আজ সে সবও ইতিহাস

সে সব হারানো সিন্দুকের চাবির গোছা ছুঁয়ে ছুঁয়ে দৌড়াও তুমি

আমাদের স্মৃতির ক্যানভাসে বিবর্ণ রঙ

তোমাদের তুলিতে কথা বলে ওঠে

ধান বোনা সবুজের সরস ভরসায় আশাবরী ঢঙে

তারপর সময়ের গণিততত্বে ছায়াসূর্য যদিও আঁধার ছোঁয়াবে

জীবনের রোজকার রঙে

 

(২৪/০৪/১২)

হুইসেল

 হুইসেল


সপ্তাহের শেষ ট্রেন

প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে চলে গেলে রাত চেরা হুইসেলে

পলাশের ক্লান্ত মগডালে

বসন্তের জ্যোৎস্না ব্যাস্ততার শরীর বিছালো

 

সারাদিন বিশ্রামের পর

মালোবিকার ভ্যানিটিতে দুধ সাদা ওম

বেআব্রু পোশাকের গন্ধে নিশুতির রঙ

মিউচুয়্যাল ফাণ্ডের জীবন

 

কখনো মায়াবী রাত

মাগধী প্রাকৃতে শিস দিয়ে ওঠে

প্যারিসের বার থেকে ভেগাসের ক্যাসিনো-

শুধু অন্ন নয় বস্ত্র ফেলে শয্যার খোঁজে

 

একদেহ আয়নার হাসি মালোবিকার স্বপ্ন নিয়ে

সরীসৃপ সময়ের চাকা মালোবিকার বরাভয় ঠোঁটে

রাত ক্লান্ত জ্যোৎস্না নিয়ে চোখে

বুড়ি চন্দ্রটা ফাজিল হয়ে ওঠে

 

(১৩/০৫/১২)

যে কবিতাটি খুঁজতে চান তার শিরোনাম দিয়ে সন্ধান করুন